
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে নিউজপেপার্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব)। বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে সংগঠনের সভাপতি এ কে আজাদ এই উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, “সম্প্রতি দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকাকে ঘিরে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এবং সামগ্রিকভাবে দেশের গণমাধ্যম পরিস্থিতি নিয়ে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-এর সর্বশেষ প্রতিবেদনে গণমাধ্যম ও তথ্য প্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে যে চিত্র ফুটে উঠেছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।”
তিনি আরও বলেন, “গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে অবাধ, নিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠার প্রত্যাশায় জনগণ একত্র হয়েছিল। আমরা বিশ্বাস করেছিলাম, তথ্য ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত হবে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, গত এক বছরে সেই প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটেনি।”
জনকণ্ঠ প্রসঙ্গে এ কে আজাদ বলেন, “আমরা আশঙ্কাজনকভাবে লক্ষ্য করেছি, সম্প্রতি একটি ‘মব’ গঠন করে জনকণ্ঠ পত্রিকার উদ্যোক্তাদের উচ্ছেদ এবং দাবি আদায়ের অপচেষ্টা চালানো হয়েছে। কর্মীদের কোনো দেনা-পাওনা থাকলে তা শ্রম আদালতের মাধ্যমে, আর সংবাদ সংক্রান্ত কোনো বিরোধ হলে তা বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলে মীমাংসার কথা। কিন্তু এসব না করে পত্রিকার কার্যালয় ও অনলাইন পোর্টালে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে।”
টিআইবির প্রতিবেদন তুলে ধরে তিনি জানান, “গত এক বছরে (আগস্ট ২০২৪ – জুলাই ২০২৫) ৪৯৬ জন সাংবাদিক হয়রানির শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে ২৬৬ জনকে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানসংক্রান্ত হত্যা মামলার আসামি করা হয়েছে। দায়িত্ব পালনের সময় তিনজন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। অন্তত ২৪ জন গণমাধ্যমকর্মী চাকরি হারিয়েছেন, আটটি সংবাদপত্রের সম্পাদক ও ১১টি টেলিভিশন চ্যানেলের বার্তাপ্রধানকে বরখাস্ত করা হয়েছে।”
এই প্রেক্ষাপটে নোয়াবের পক্ষ থেকে সরকারের প্রতি জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে এ কে আজাদ বলেন, “গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরি। সংবাদপত্র বা গণমাধ্যমে ‘মব’ তৈরি করে মালিকপক্ষকে হুমকি দেওয়ার সংস্কৃতি অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।”
তিনি বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি, গণমাধ্যমের নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা নিশ্চিত হলে তা গণতন্ত্রকে আরও শক্তিশালী করবে।”