
চিকিৎসা প্রযুক্তিতে যুগান্তকারী আবিষ্কার
চীনা বিজ্ঞানীরা এমন এক চিকিৎসা প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন যা মাত্র ১৮০ সেকেন্ড বা তিন মিনিটে ভাঙা হাড় জোড়া লাগাতে সক্ষম। নতুন এই প্রযুক্তির নাম দেওয়া হয়েছে ‘বোন–০২’ (Bone-02)।
এই ‘বোন গ্লু’ শরীরে প্রাকৃতিকভাবে শোষিত হয়ে যায়। ফলে প্রচলিত ধাতব ইমপ্ল্যান্টের মতো দ্বিতীয়বার অস্ত্রোপচারের দরকার হয় না।
ঝিনুক থেকে অনুপ্রাণিত প্রযুক্তি>
চীনের ঝেজিয়াং প্রদেশের গবেষক দল সম্প্রতি এ প্রযুক্তি আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মোচন করে। গবেষণার নেতৃত্ব দেন স্যার রান রান শো হাসপাতালের অর্থোপেডিক সার্জন লিন শিয়েনফেং।
তিনি জানান, পানির নিচে সেতুর গায়ে ঝিনুক যেভাবে দৃঢ়ভাবে আটকে থাকতে পারে, সেই বৈশিষ্ট্য থেকেই অনুপ্রাণিত হয়ে তৈরি হয়েছে এই আঠা।
অবিশ্বাস্য কার্যকারিতা>
গবেষকদের দাবি—মাত্র ২–৩ মিনিটেই রক্তময় পরিবেশে হাড় জোড়া লাগাতে সক্ষম। প্রচলিত চিকিৎসায় যেখানে ইস্পাতের পাত ও স্ক্রু লাগাতে হয়, সেখানে এটি পুরো প্রক্রিয়া শেষ করে মাত্র ১৮০ সেকেন্ডে। ইতোমধ্যে ১৫০ জন রোগীর ওপর এ প্রযুক্তি প্রয়োগ করা হয়েছে।
সহনশীলতার ক্ষমতা>
সর্বোচ্চ ৪০০ পাউন্ড পর্যন্ত চাপ সহ্য করতে পারে।
পাশ থেকে চাপ পড়লে ভাঙে না প্রায় ০.৫ মেগা প্যাসকাল (৫ লাখ প্যাসকাল) পর্যন্ত।
ওপর থেকে চাপ সহ্য করতে পারে প্রায় ১০ মেগা প্যাসকাল (১ কোটি প্যাসকাল) পর্যন্ত।
ফলে ধাতব ইমপ্ল্যান্টের বিকল্প হিসেবে এটি ব্যবহারের সুযোগ তৈরি হয়েছে। একই সঙ্গে সংক্রমণ ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ঝুঁকিও অনেক কম বলে দাবি গবেষকদের।
বর্তমান বাজারে যা আছে>
বর্তমানে বোন সিমেন্ট ও বোন ভয়েড ফিলার ব্যবহৃত হলেও, এগুলো আঠালো বৈশিষ্ট্য দাবি করে না। আগের হাড়ের আঠাগুলো (জেলাটিন, ইপোক্সি রেজিন ও অ্যাক্রিলেটভিত্তিক) মানুষের দেহে ব্যবহারের জন্য উপযোগী ছিল না, কারণ সেগুলোর জৈব-সামঞ্জস্যতা ছিল না।