
১. ঐতিহাসিক পরিপ্রেক্ষিত
নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় (Nalanda Mahavihara) ছিল প্রাচীন ভারতের অন্যতম শিক্ষার কেন্দ্র, গুঠব দ্য Gupta সাম্রাজ্যের সম্রাট কুমারগুপ্তপ্রথম কর্তৃক প্রায় ৪২৭ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত । এটি ধর্ম, দর্শন, চিকিৎসা, গণিতসহ নানা বিদ্যার জন্য বিখ্যাত ছিল।
২. বিজ্ঞানসম্মত ভাঙনের আসল ঘটনা
প্রচলিত ইতিহাস অনুযায়ী, ১২শ শতকের শেষের দিক (~c.1200 CE) বখতিয়ার খিলজি (Muhammad bin Bakhtiyar Khalji) নালন্দার মঠ ও গ্রন্থাগার আক্রমণ করে ধ্বংস করেন ।
ঐতিহাসিক/তিব্বতি বিবরণ অনুযায়ী, শিক্ষার্থীদের হত্যার পর কয়েক স্তরের ভগ্নশিল–অবশিষ্টে পুড়ে যাওয়া ধুলোভর্তি স্তর পাওয়া যায়, যা একটি বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডের প্রমাণ ।
তবে, কিছু ইতিহাসবিদ আরও সংবেদনশীল বিশ্লেষণে বলেন—সেপ্টিক ক্রোনোলজি অনুযায়ী তিব্বতী চরিতক এবং স্বতঃসিদ্ধ সাহিত্যে কোথাও পরিষ্কার উল্লেখ নেই যে বখতিয়ার সরাসরি নালন্দা ভাঙেন ।
৩. বহুমুখী মত ও বিতর্ক
একদিকে প্রচলিত ঐতিহাসিক ধারণা: বখতিয়ার ছিল প্রধান ভাঙচুরকারী ।
অন্যদিকে, কিছু সমালোচক ও আধুনিক বিশ্লেষক বলেন—এই ধারণা দমনমূলক নয়, বরং মৌখিক বা রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে গঠিত; কারণ প্রাথমিক সময়ের কোনো নির্ভরযোগ্য উৎসে স্পষ্টভাবে নালন্দার ধ্বংসের কথা উল্লেখ নেই ।
Reddit বা সুযোগ্য বক্তৃতা-পাঠেও এই বিতর্কের গভীরতা ফুটে ওঠে:
“…it is generally agreed that it is one of the waves of Islamic invasions that destroyed those two institutions.”
“Buddhism did not disappear where this did not occur…”
৪. বিবর্তন আজকের নালন্দা এবং ঐতিহাসিক স্মরণযজ্ঞ
আজকের দিনে নালন্দা একটি আন্তর্জাতিক ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক আইকন। ২০২৪ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রাজগিরে নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের নব-প্রাঙ্গণ উদ্বোধন করেন, যেখানে তিনি উল্লেখ করেন—“নালন্দার পতন ভারতের জন্য অন্ধকার যুগের সূচনা” ।
সবমিলিয়ে সংক্ষেপ>
হ্যাঁ, প্রচলিত বিশ্বাস রয়েছে, বখতিয়ার খিলজি প্রায় ১২ শতকে নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় ধ্বংস করেছিলেন—একটি বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ড ও হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে। তবে, কিছু ইতিহাসবিদ ও সমালোচক মনে করেন, এ ব্যাপারটিতে প্রাথমিক বা নির্ভরযোগ্য উৎস আমার মতে প্রমাণ করে না, বরং এটা একটি ঐতিহাসিক–রাষ্ট্রনৈতিক কারসাজি বা ভাবনার ফসল। ফলে, এ ঘটনার ব্যাখ্যা কোনও একমাত্র দৃষ্টিভঙ্গি নয়, বরং ইতিহাস এবং রাজনৈতিক ব্যাখ্যা–উভয়েরই মিশ্রণে গঠিত।