
আয়কর রিটার্ন অডিটে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি বাড়াতে নতুন নির্দেশনা জারি করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। নতুন এ নির্দেশনা কার্যকর হলে অডিট প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে, রাজস্ব আয় বাড়বে এবং করদাতাদের মধ্যে আস্থা তৈরি হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
রোববার (১৭ আগস্ট) এনবিআর থেকে সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
‘আয়কর রিটার্ন অডিট নির্দেশনা, ২০২৫’ শিরোনামে জারি করা এ গাইডলাইনে করদাতাদের রিটার্ন যাচাই-বাছাই থেকে শুরু করে অডিট পরিচালনা, প্রতিবেদন প্রস্তুত ও নিষ্পত্তির প্রতিটি ধাপ বিস্তারিতভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে।
কীভাবে হবে রিটার্ন নির্বাচন>
রিটার্ন বাছাই হবে ঝুঁকিভিত্তিক পদ্ধতিতে অটোমেটেড সিস্টেম ব্যবহার করে।
কাগজে দাখিল করা রিটার্নের ক্ষেত্রে আপাতত র্যান্ডম বাছাই চালু থাকবে।
একই করদাতাকে টানা তিন বছর অডিটে না আনার বিধান রাখা হয়েছে।
লোকসান, শূন্য আয় বা অস্বাভাবিকভাবে কম আয় দেখালে অডিটে আনা যাবে।
নতুন করদাতার প্রথম রিটার্ন সাধারণত অডিটে নেওয়া হবে না—যদি না তাতে স্পষ্ট রাজস্ব ক্ষতি দেখা যায়।
অডিট প্রক্রিয়ার ধাপ>
রিটার্ন নির্বাচনের পর করদাতাকে ৩০ দিনের মধ্যে নোটিশ দেওয়া হবে।
ব্যাখ্যা সন্তোষজনক হলে অডিট থেকে অব্যাহতি দেওয়া যাবে।
অন্যথায় কর পরিদর্শক মাঠ পর্যায়ে তদন্ত করে প্রমাণ সংগ্রহ করবেন।
করদাতা চাইলে সংশোধিত রিটার্ন জমা দিতে পারবেন; তা না হলে আইন অনুযায়ী কর নির্ধারণ করা হবে।
প্রতিটি মামলার অগ্রগতির মাসিক প্রতিবেদন বোর্ডে পাঠানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
ব্যক্তি করদাতাদের জন্য নজরদারি>
ব্যক্তি করদাতাদের ক্ষেত্রে বেতনভিত্তিক আয়, ব্যাংক হিসাবের জমা, ভাড়া আয়, কৃষি আয়, রেমিট্যান্স, বিনিয়োগ আয় ও জীবনযাত্রার ব্যয় খুঁটিয়ে যাচাই করা হবে। আয়ের সঙ্গে সম্পদ ও ব্যয়ের সংগতি রয়েছে কি না, সেটি বিশেষভাবে দেখা হবে।
কোম্পানি করদাতাদের ক্ষেত্রে>
কোম্পানির নিরীক্ষিত হিসাব জমা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। টার্নওভার ও ব্যাংক জমার সঙ্গে ব্যয় মিলছে কি না, অপ্রাসঙ্গিক খরচ দেখানো হয়েছে কিনা, উৎসে কর যথাযথভাবে কাটা হয়েছে কিনা—এসব খুঁটিয়ে দেখা হবে। এছাড়া নতুন ঋণ বা দেনা প্রদর্শন ও আয়কর আইনের ধারা অনুসরণের বিষয়ও অডিটের আওতায় আসবে।
এনবিআর আশা করছে, নতুন এ নির্দেশনা কার্যকর হলে কর ফাঁকি প্রতিরোধ হবে, রাজস্ব আয় বাড়বে এবং করদাতাদের মধ্যে স্বচ্ছ কর সংস্কৃতি গড়ে উঠবে।