
পার্বত্য চট্টগ্রামের শিক্ষার্থীদের জন্য বড় সুখবর! আগামী ছয় মাসের মধ্যে পার্বত্য অঞ্চলের ১০০টি বিদ্যালয়ে স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সংযোগ চালু করতে যাচ্ছে সরকার। এর ফলে দুর্গম পাহাড়ি এলাকার শিক্ষার্থীরা ই-লার্নিংয়ের মাধ্যমে শহরের অভিজ্ঞ শিক্ষকদের ক্লাসে অংশ নিতে পারবে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেন,
“এই উদ্যোগ শিক্ষা ক্ষেত্রে এক প্রযুক্তিগত বিপ্লব। এতে শিক্ষার মানে সমতা নিশ্চিত হবে এবং পাহাড়ি শিক্ষার্থীরা প্রযুক্তিতে দক্ষ হয়ে উঠবে, যা তাদের উচ্চশিক্ষা ও কর্মজীবনে সহায়ক হবে।”
✅ মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা
সুপ্রদীপ চাকমা আরও বলেন,
“আমার মূল চিন্তা হচ্ছে মানসম্পন্ন শিক্ষা। কোটা সবসময় থাকবে না, আমাদের প্রতিযোগিতা করতে হবে। তাই ভালো স্কুল-কলেজ গড়ে তুলতে হবে।”
তিনি জানান, স্যাটেলাইট শিক্ষাব্যবস্থা চালুর পাশাপাশি উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে ছাত্রাবাস ও হোস্টেল নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
🏫 শিক্ষা অবকাঠামো: ইঞ্জিনিয়ারিং ও নার্সিং কলেজ নির্মাণের উদ্যোগ
সরকার পার্বত্য এলাকায়—
একটি প্রকৌশল (ইঞ্জিনিয়ারিং) কলেজ
একটি নার্সিং কলেজ
ছাত্রাবাস ও অনাথালয়
উন্নত ক্রীড়া সুবিধাসম্পন্ন পরিবেশ
নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
🎋 অর্থনৈতিক উন্নয়নে বাঁশ চাষ ও কৃষি প্রকল্প
উপদেষ্টা জানান, তিন বছর মেয়াদি বাঁশ চাষ প্রকল্প এবং পশুপালন ও মৎস্য চাষ সম্প্রসারণে কাজ করছে সরকার।
তিনি বলেন,
“বাঁশ চাষ পার্বত্য অঞ্চলের অর্থনীতির চালিকাশক্তি হতে পারে। পরিবেশবান্ধব এই চাষ পদ্ধতি আমাদের প্রকৃতি সংরক্ষণেও সাহায্য করবে।”
☕ কফি ও কাজু বাদাম চাষে আন্তর্জাতিক বাজারের লক্ষ্য
সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামে কফি, কাজু বাদাম এবং ভুট্টা চাষ সম্প্রসারণের পরিকল্পনা নিয়েছে।
সুপ্রদীপ চাকমা বলেন,
“আমরা চাই এই অঞ্চলের কৃষিপণ্য আন্তর্জাতিক বাজারেও রপ্তানি হোক। পাহাড়ি কৃষকরা যাতে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে পারে।”
🌊 কাপ্তাই হ্রদ: দেশের অর্থনীতির সম্ভাবনাময় জলাধার
তিনি রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদকে ‘সোনার খনি’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, “এই হ্রদ থেকে মাছ আহরণ করে স্থানীয় ও জাতীয় অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখা সম্ভব।”
🕊️ সম্প্রীতি ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নেই অগ্রাধিকার
উপদেষ্টা বলেন,
“সরকার সব সম্প্রদায়ের অধিকার নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর। আমরা চাই একটি অসাম্প্রদায়িক, ঐক্যবদ্ধ ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে উঠুক। পাহাড়ি জনগণ আর পিছিয়ে থাকতে চায় না—তারা দেশের মূলস্রোতে যুক্ত হতে চায়।”
সংক্ষিপ্ত মন্তব্য:
শিক্ষা, প্রযুক্তি, কৃষি ও পরিবেশবান্ধব উন্নয়ন—সব মিলিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের জন্য এক নতুন যুগের সূচনা হতে যাচ্ছে। সরকারের এসব উদ্যোগ সফল হলে পাহাড়ি জনগণ শিক্ষা ও অর্থনীতির মূলধারায় আরও দৃঢ়ভাবে যুক্ত হতে পারবে।