ঢাকা , রবিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৩ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জাতীয় নির্বাচনে এআই ও ড্রোন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা: চূড়ান্ত হলো আচরণ বিধিমালার খসড়া

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির অপব্যবহার, ডিপফেইক ভিডিও, মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কুৎসা রটানো কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। নির্বাচন কমিশন (ইসি) এসব বিষয়ে নতুন বিধান সংযোজন করে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের জন্য আচরণ বিধিমালার খসড়া চূড়ান্ত করেছে।

আজ বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) নির্বাচন কমিশনের সভায় এই খসড়া অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে। সভায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে কমিশনার, সিনিয়র সচিব ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।

নতুন বিধানসমূহ:

এআই ও প্রযুক্তির ব্যবহার: নির্বাচনি প্রচারণায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যেকোনো অপব্যবহার, যেমন ডিপফেইক ভিডিও, এডিট করা অডিও-ভিডিও, বানোয়াট সংবাদ, বিভ্রান্তিকর কনটেন্ট ও চেহারা বিকৃত করে প্রচারণা নিষিদ্ধ থাকবে। এসব লঙ্ঘন করলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম: আচরণ বিধিমালার ১৬ ধারায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার চালানোর সুযোগ থাকলেও ঘৃণাত্মক বক্তব্য, ধর্মীয় বা জাতিগত অনুভূতির অপব্যবহার এবং ব্যক্তিগত আক্রমণ নিষিদ্ধ।

ড্রোন নিষিদ্ধ: নির্বাচনি প্রচারণা ও ভোটগ্রহণের দিন ড্রোন, কোয়াডকপ্টার বা এ জাতীয় যন্ত্র ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান: প্রচারণার জন্য কোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা যাবে না।

টাকা লেনদেন: প্রার্থী ১০ হাজার ও রাজনৈতিক দল ২০ হাজার টাকার বেশি লেনদেন করতে হলে তা ব্যাংকিং চ্যানেলে করতে হবে।

যানবাহন ব্যবহারে বিধিনিষেধ: ভোটের দিন অনুমোদিত ব্যক্তি ছাড়া কেউ মোটরসাইকেল বা যান্ত্রিক যান ব্যবহার করতে পারবে না।

নিষিদ্ধ দলের অঙ্গীকারনামা:
নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা যেন অন্য দল থেকে প্রার্থী হতে না পারে, সে জন্য নতুনভাবে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের কাছ থেকে লিখিত অঙ্গীকার নেওয়া হবে। দলীয় অঙ্গীকারনামায় উল্লেখ থাকবে—মনোনীত প্রার্থী কোনো নিষিদ্ধ সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না বা এখনো নেই।

প্রচার উপকরণ ও অন্যান্য বিধিনিষেধ:

ব্যানার, লিফলেট, হ্যান্ডবিল, ফেস্টুন সাদা-কালো হতে হবে।

ব্যানার: ১০ ফুট বাই ৪ ফুট

ফেস্টুন: ১৮ বাই ২৪ ইঞ্চি

লিফলেট/হ্যান্ডবিল: A4 সাইজ

নির্বাচনি প্রচারে দলীয় প্রধান ও সাধারণ সম্পাদক হেলিকপ্টার ব্যবহার করতে পারবেন।

প্রার্থীরা নির্বাচনি তফসিল ঘোষণার পর নিজ নির্বাচনি এলাকার কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য থাকতে পারবেন না।

সিইসি’র মন্তব্য:
সিইসি এএমএম নাসির উদ্দিন বলেন, “ভুল তথ্য ও বিভ্রান্তি ছড়ানো ঠেকানো আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ হবে। উন্নত দেশগুলোও এটি পুরোপুরি রোধ করতে পারেনি। তবে গণমাধ্যম ও সবার সহযোগিতায় আমরা তা মোকাবিলা করব।”

সর্বাধিক পঠিত

নিউইয়র্কে ড. ইউনূসের স্যুটে বিশ্বনেতাদের সমাগম

জাতীয় নির্বাচনে এআই ও ড্রোন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা: চূড়ান্ত হলো আচরণ বিধিমালার খসড়া

আপডেট সময়: ১২:৩৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ অগাস্ট ২০২৫

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির অপব্যবহার, ডিপফেইক ভিডিও, মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কুৎসা রটানো কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। নির্বাচন কমিশন (ইসি) এসব বিষয়ে নতুন বিধান সংযোজন করে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের জন্য আচরণ বিধিমালার খসড়া চূড়ান্ত করেছে।

আজ বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) নির্বাচন কমিশনের সভায় এই খসড়া অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে। সভায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে কমিশনার, সিনিয়র সচিব ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।

নতুন বিধানসমূহ:

এআই ও প্রযুক্তির ব্যবহার: নির্বাচনি প্রচারণায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যেকোনো অপব্যবহার, যেমন ডিপফেইক ভিডিও, এডিট করা অডিও-ভিডিও, বানোয়াট সংবাদ, বিভ্রান্তিকর কনটেন্ট ও চেহারা বিকৃত করে প্রচারণা নিষিদ্ধ থাকবে। এসব লঙ্ঘন করলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম: আচরণ বিধিমালার ১৬ ধারায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার চালানোর সুযোগ থাকলেও ঘৃণাত্মক বক্তব্য, ধর্মীয় বা জাতিগত অনুভূতির অপব্যবহার এবং ব্যক্তিগত আক্রমণ নিষিদ্ধ।

ড্রোন নিষিদ্ধ: নির্বাচনি প্রচারণা ও ভোটগ্রহণের দিন ড্রোন, কোয়াডকপ্টার বা এ জাতীয় যন্ত্র ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান: প্রচারণার জন্য কোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা যাবে না।

টাকা লেনদেন: প্রার্থী ১০ হাজার ও রাজনৈতিক দল ২০ হাজার টাকার বেশি লেনদেন করতে হলে তা ব্যাংকিং চ্যানেলে করতে হবে।

যানবাহন ব্যবহারে বিধিনিষেধ: ভোটের দিন অনুমোদিত ব্যক্তি ছাড়া কেউ মোটরসাইকেল বা যান্ত্রিক যান ব্যবহার করতে পারবে না।

নিষিদ্ধ দলের অঙ্গীকারনামা:
নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা যেন অন্য দল থেকে প্রার্থী হতে না পারে, সে জন্য নতুনভাবে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের কাছ থেকে লিখিত অঙ্গীকার নেওয়া হবে। দলীয় অঙ্গীকারনামায় উল্লেখ থাকবে—মনোনীত প্রার্থী কোনো নিষিদ্ধ সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না বা এখনো নেই।

প্রচার উপকরণ ও অন্যান্য বিধিনিষেধ:

ব্যানার, লিফলেট, হ্যান্ডবিল, ফেস্টুন সাদা-কালো হতে হবে।

ব্যানার: ১০ ফুট বাই ৪ ফুট

ফেস্টুন: ১৮ বাই ২৪ ইঞ্চি

লিফলেট/হ্যান্ডবিল: A4 সাইজ

নির্বাচনি প্রচারে দলীয় প্রধান ও সাধারণ সম্পাদক হেলিকপ্টার ব্যবহার করতে পারবেন।

প্রার্থীরা নির্বাচনি তফসিল ঘোষণার পর নিজ নির্বাচনি এলাকার কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য থাকতে পারবেন না।

সিইসি’র মন্তব্য:
সিইসি এএমএম নাসির উদ্দিন বলেন, “ভুল তথ্য ও বিভ্রান্তি ছড়ানো ঠেকানো আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ হবে। উন্নত দেশগুলোও এটি পুরোপুরি রোধ করতে পারেনি। তবে গণমাধ্যম ও সবার সহযোগিতায় আমরা তা মোকাবিলা করব।”