
সাভার প্রতিনিধি : ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল ঢাকার সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ডে রানা প্লাজা ধসে নিহত হন ১ হাজার ১৩৬ জন। গুরুতর আহত ও পঙ্গুত্ব বরণ করে আরো দেড় হাজারের বেশি শ্রমিক। এই ঘটনা দেশের গণ্ডি পেরিয়ে নাড়া দিয়েছিলো বিশ্বকেও। মর্মান্তিক এ ঘটনার এক যুগ পেরিয়ে গেলেও এখনও শেষ হয়নি বিচার। তিন বছর আগে শুরু হওয়া সাক্ষ্যর ৫ ভাগের একভাগও শেষ হয়নি। কবে নাগাদ শেষ হবে তাও বলতে পারছেন না রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের আইনজীবীসহ সংশ্লিষ্টরা।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) ওই দুর্ঘটনায় নিহত শ্রমিকদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এবং আহত শ্রমিকদের সুচিকিৎসা, ক্ষতিপূরণসহ নানা দাবিতে সকাল থেকে ধসে পরা রানা প্লাজার পরিত্যক্ত জায়গার সামনের জড়ো হতে শুরু করেন নিহত শ্রমিকদের স্বজন, আহত শ্রমিক ও বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে ওই জায়গায় অস্থায়ী প্রতিবাদ-প্রতিরোধ শহীদ বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান তাঁরা। এসময় রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় ভবন মালিক সোহেল রানাসহ অন্যদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও শ্রমিকদের ন্যয্য দাবিগুলো পূরণের দাবি জানান শ্রদ্ধা নিবেদন করতে আসা বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
এদিকে মামলায় কারাগারে থাকা রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানাকে হাইকোর্ট জামিন দেওয়ার পর রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে জামিন স্থগিতের আবেদন জানায়। ওই আবেদনের ওপর শুনানি শেষে ২০২৪ সালের ১৫ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ৪ বিচারপতির বেঞ্চ সোহেল রানার জামিন স্থগিত করেন। একই সঙ্গে ছয় মাসের মধ্যে বিচারিক আদালতকে মামলা নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন। এরপর দ্বিগুণ সময় পার হলেও মামলাটি সাক্ষ্য গ্রহণ পর্যায়ে রয়ে গেছে।
এসব বিষয়ে আসামিপক্ষের আইনজীবী মাসুদ খান খোকন বলেন, রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় হত্যা ও ইমারত নির্মাণ আইনের দুই মামলায় নয় বছর আগে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। কয়েকজন আসামি উচ্চ আদালতে অভিযোগ গঠনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আবেদন করেন। ইমারত নির্মাণ আইনের মামলাটিতে এক আসামির পক্ষে স্থগিতাদেশ থাকায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়নি। মামলা দুইটির বিচার শেষ না হওয়ায় আসামি সোহেল রানা কারামুক্ত হতে পারছেন না।
তিনি আরও বলেন, দীর্ঘ ১২ বছর কারাগারে রয়েছেন সোহেন রানা। এই যে এতগুলো বছর তার জীবন থেকে চলে গেলো, যদি তিনি খালাস পান কে তাকে এই সময়গুলো ফিরিয়ে দেবে। রানা প্লাজার ভবন ধস নিছক একটি দুর্ঘটনা। তাছাড়া ভবনটির প্রকৃত মালিক সোহেল রানাও নন, তার বাবা আব্দুল খালেক। এখানে রানার কোনও হাত নেই। তার মতে আসামি সোহেল রানা বিচারহীনভাবে কারাগারে আটক রয়েছেন বলে জানান তিনি।