সাভারে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায় সিন্ডিকেটের দুই সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার রাতে অভিযান চালিয়ে সাভার পৌরসভার মুক্তির মোড়ের তারাপুর এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়।
আটককৃতরা হলেন- সাভারের আনন্দপুর এলাকার আব্দুস সামাদের ছেলে সাজেদুল ইসলাম সাদ (২৫) ও চট্টগ্রাম জেলার মানিকছড়ি গ্রামের সৈয়দ মোহাম্মদ ইসমাইলের মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস ওরফে মায়া। তারা দুজনে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে তারাপুর এলাকার প্রবাসী সিদ্দিকুর রহমানের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন।
পুলিশ বলছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিভিন্ন বয়সি মানুষকে আটক করে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছিলেন সাদ ও মায়া। এসব কাজে তাদের সহযোগিতা করতেন জিহাদ ও সৌরভ নামে দুজন।
এই সিন্ডিকেটের চারজনের বিরুদ্ধে সম্প্রতি সাভার থানায় লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী একজনের মা। এরপরেই ওই দুজনকে আটক করা হয়। তবে সহযোগী জিহাদ ও সৌরভ পলাতক রয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ফাঁদে ফেলে মনোয়ার হোসেন পলাশ (২০) নামে আশুলিয়ার এক কলেজছাত্রকে সাভারে ডেকে এনে অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায় করে চক্রটি। এমনকি পলাশকে আটকে রেখে মারধর করে। ধারণ করে আপত্তিকর ভিডিও।
ভুক্তভোগী পলাশ জানান, তিনি আশুলিয়ার ভাদাইল দক্ষিণপাড়া এলাকার বাসিন্দা। স্থানীয় সৃষ্টি সেন্ট্রাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের দ্বিতীয় বর্ষে ছাত্র তিনি। কয়েকদিন আগে ফেসবুকের মাধ্যমে মায়ার সঙ্গে তার বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে উঠে। গত ৩১ মার্চ ঈদের দিন বিকালে মায়া দেখা করার জন্য তাকে সাভারের মুক্তির মোড়ে আসতে বলেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে তিনি সেখানে গেলে মায়া, সাদসহ আরও তিন থেকে চারজন পলাশকে একটি ফ্ল্যাটে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে তাকে ধারালো অস্ত্রের মুখে আটক করে গামছা দিয়ে হাত-পা এবং ওড়না দিয়ে চোখ বাঁধেন। পরে দুই লাখ টাকা মুক্তিপণের দাবিতে মারধর করেন।
পরবর্তীতে নগদ পাঁচ হাজার ৬০০ টাকাসহ পরিবারের কাছে বিকাশের মাধ্যমে ২৬ হাজার টাকা আদায় করেন। মক্তিপণের অবশিষ্ট টাকা দেওয়ার শর্তে আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করেন। ওই দিন রাতে সাভারের পাকিজা এলাকার রাস্তার পাশে পলাশকে ফেলে যান তারা। অসুস্থ অবস্থায় পলাশকে উদ্ধার করে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে পথচারীরা। পরে আপত্তিকর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে মোবাইল ফোনে কল করে টাকা দাবি করেন।
এ বিষয়ে সাভার মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আশিক ইকবাল বলেন, ‘অভিযোগের পর অভিযুক্ত দুজনকে আটক করা হয়। তাদের ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’
Leave a Reply