
রাজশাহীর রাজপাড়া থানাধীন লক্ষ্মীপুরে অবস্থিত রাজশাহী জেনারেল হাসপাতালে পার্টনারদের মধ্যে তীব্র দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে। তদন্তে উঠে এসেছে, হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. হুমায়ন খালেদ শিহাবই অনিয়ম ও দুর্নীতির মূল হোতা।
২০২১ সালের ২৫ মার্চ স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী হাসপাতালটি যৌথভাবে পরিচালিত হচ্ছে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানে ৬২ জন পার্টনার রয়েছেন। চুক্তি মোতাবেক আবু সাদাত মো. সায়েম (রাজু) চেয়ারম্যান এবং হুমায়ন খালেদ শিহাব ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
চেয়ারম্যান রাজুর অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে শিহাব আর্থিক হিসাব দিচ্ছিলেন না। তিনি নানা অজুহাতে হিসাব প্রদানে গড়িমসি করেন। ফলে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন, বিদ্যুৎ বিলসহ প্রয়োজনীয় খরচে সমস্যা তৈরি হয়। চাপের মুখে পড়ে শিহাব হিসাব দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবে তা করেননি।
গত ২০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৬টায় নির্ধারিত সময়ে হিসাব বুঝিয়ে না দিয়ে শিহাব তার সহযোগী কয়েকজন পার্টনার ও বহিরাগত লোক নিয়ে ম্যানেজারের কক্ষে প্রবেশ করেন। এসময় তারা মারমুখী আচরণ করেন এবং পরে চেয়ারম্যানের চেম্বারে ঢুকে সিসি ক্যামেরা ভাঙচুর করে নিয়ে যান। অভিযোগ রয়েছে, এ সময় গালিগালাজ, হুমকি ও প্রাণনাশের ভয়ও দেখানো হয়।
পরবর্তীতে চেয়ারম্যান রাজুসহ অন্যান্য পার্টনাররা বৈঠক করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। পরে শিহাব ও তার সহযোগী জাবের আলী, শরিফুল ইসলাম, ইয়াহিয়া খান, আল হাসান, ওমর ফারুক ও আবু সাঈদের বিরুদ্ধে রাজপাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়।
অন্যদিকে, শিহাব নিজেকে হাসপাতালের একক মালিক দাবি করলেও কোনো প্রমাণপত্র দেখাতে পারেননি। গণমাধ্যমকর্মীরা যৌথ ব্যবসার চুক্তিপত্র হাতে পেলেও শিহাব উল্টো সাংবাদিককে হুমকি দিয়ে বলেন, “আপনি কে, কেন আমি আপনাকে ডকুমেন্ট দেখাবো? প্রয়োজনে সাংবাদিক সম্মেলন বা কোর্টে দেখাবো।”
ক্যামেরা ভাঙার অভিযোগ বিষয়ে তিনি দাবি করেন, “প্রতিষ্ঠান আমার, সেখানে আমাকে না জানিয়ে ক্যামেরা বসানো হলে সেটা আমি খেলে নিতেই পারি।”
এ প্রসঙ্গে রাজপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জানান, “পার্টনারদের মধ্যে হিসাব নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছে। উভয় পক্ষ অভিযোগ দায়ের করেছে। তদন্তের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”