
নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলায় ঘটে যাওয়া এক হৃদয়বিদারক ঘটনা স্থানীয়দের মনে ক্ষোভ ও বেদনার ঝড় তুলেছে। চরঈশ্বর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা শংকর সাহা (৪০), দুই সন্তানের জনক ও পেশায় দিনমজুর, এনজিও থেকে ঋণ না পেয়ে ও অপমানিত হয়ে জীবনের ইতি টানলেন।
প্রায় ৮-৯ মাস আগে তিনি হীড বাংলাদেশ-এর ওছখালি শাখা থেকে সাড়ে ১২ শতাংশ সুদে ২ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। নিয়মিত কিস্তি পরিশোধ করার পর নতুন ঋণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও, সম্প্রতি অফিসে গিয়ে তিনি শুধু ঋণ বঞ্চিতই হননি, বরং অপমানের শিকারও হন।
এরপর ক্ষোভ ও হতাশায় শংকর বিষপান করেন। বিকেল ৫টা ৩০ মিনিটের দিকে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়।
শংকরের স্ত্রী রিংকু সাহা অভিযোগ করেন—“এটা আত্মহত্যা নয়, এক ধরনের হত্যা। ঋণ না দিয়ে ও অপমান করে তাকে বিষ খাওয়ানো হয়েছে।”
অন্যদিকে হীড বাংলাদেশের এরিয়া ম্যানেজার অলক কুমার হালদার জানান—“শংকর অফিসে আসার আগেই বিষপান করেছিলেন। আত্মীয়রা জানিয়েছিল তিনি ঋণ শোধ করতে পারবেন না। আমাদের অফিসে কাউকে বিষ খাওয়ানোর কোনো সুযোগ নেই।”
হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. ওমর ফারুক জানান, শংকরের পেট থেকে বিষ বের করা হয় এবং ধারণা করা হচ্ছে তিনি ইঁদুরনাশক জাতীয় বিষ পান করেছিলেন।
এ বিষয়ে হাতিয়া থানার ওসি একেএম আজমল হুদা বলেন—“লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্টের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এই ঘটনার পর হাতিয়ার সাধারণ মানুষ ক্ষোভে ফেটে পড়েছে। তাদের মনে প্রশ্ন—এটি কি শুধুই আত্মহত্যা, নাকি এক নির্মম হত্যাকাণ্ড? এলাকায় ন্যায়বিচারের দাবিতে চাপ বাড়ছে।