
যশোরের শার্শা উপজেলার উলাশী ইউনিয়নের গিলাপোল গ্রামে অষ্টম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগে পুলিশ এক কথিত সাংবাদিককে আটক করেছে। আটককৃত ব্যক্তির নাম মনিরুল ইসলাম মনি। অভিযুক্ত মনিরুল ইসলাম মনি নিজেকে বড়মাপের সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দিতেন। তার স্ত্রী স্থানীয় আরআরএফ বর্ণমালা বিদ্যাপীঠ স্কুলের শিক্ষিকা।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে তাকে আটক করা হয়। এর আগে এদিন সকালে ভুক্তভোগীর মা শার্শা থানায় হাজির হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেছেন। মামলার নম্বর ২২।
মামলার সুত্রে জানা গেছে, ঘটনা ঘটে গত ১৮ সেপ্টেম্বর দুপুরে। উলাশী গিলাপোলের আরআরএফ বর্ণমালা স্কুলের টিফিন সময় মনিরুল ইসলাম মনি ওই স্কুলে যান। এরপর তিনি এক শিক্ষার্থীর মাধ্যমে ভুক্তভোগীকে বাইরে ডাকেন। পরে মোটরসাইকেলে তুলে প্রথমে একটি হোটেলে নাস্তা খাওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে নিজের বাড়িতে নিয়ে যান। সেখানে গিয়ে তাকে জোরপূর্বক বলাৎকার করেন।
ভুক্তভোগী ছাত্র সাংবাদিকের কৌশল ও ঘটনা সম্পর্কে বলেন: “গত ১৮ সেপ্টেম্বর টিফিনের সময় আমাদের স্কুলের ম্যাডামের স্বামী মনিরুল ইসলাম মনি স্কুলে আসেন। আমরা তাকে ছোটবেলা থেকেই চিনি। স্কুল চলাকালীন সময়ে তিনি স্কুলের বাইরে থেকে আরেকজন ছাত্র দিয়ে আমাকে ডাকেন। আমি শিক্ষককে বলে বাইরে যাই। তখন তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করেন, ‘তোমার কাছে কত টাকা আছে?’ এরপর বলেন, ‘সিঙ্গাড়া খাওয়াতে হবে।’ আমি বলি, আমাদের স্কুলেই ক্যান্টিন আছে, সেখানে খাই। তিনি বলেন, ‘আমি ওখানে খাব না, গিলাপোলের ধানসিঁড়ি হোটেলে খাব।’ আমি বললাম, ‘আমার ক্লাস আছে, আরেকদিন যাব।’ কিন্তু তিনি জোর করে আমাকে মোটরসাইকেলে তুলে ওই হোটেলে নিয়ে যান। সেখানে গিয়ে দেখি হোটেল বন্ধ। তবে তিনি আগে থেকেই জানতেন হোটেল বন্ধ। এরপর বলেন, ‘আমার বাসায় পাকা কলা আছে, তোমাকে খাওয়াব।’ এভাবে কয়েকবার জোর করে শেষে উনার বাড়িতে নিয়ে গিয়ে আমাকে বলাৎকার করেন।”
শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আলিম বলেন: “এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হয়েছে এবং আসামী আটক আছে।” যশোরের পুলিশ সুপার রওনক জাহান বলেন: “এটি একটি জঘন্য অপরাধ। ভুক্তভোগীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন করা প্রক্রিয়াধীন আছে। আমাদের পুলিশ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এ মামলার তদন্ত চালাচ্ছে।”
এ ঘটনায় স্থানীয় সমাজে যথেষ্ট উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। পুলিশ জানান, আসামিকে আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।