
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন নির্মাণে ২৭ কিলোমিটারের বেশি পাহাড়ি এলাকা কাটা হয়েছে। এর মধ্যে ১১.৯২ কিলোমিটার এলাকায় পাহাড় কাটা হয় সরাসরি অনুমোদন নিয়ে। তবে খাড়াভাবে পাহাড় কাটায় বর্ষায় পাহাড় ধসের ঝুঁকি বেড়ে গেছে এই রেলপথে।
চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের হাছান কাটাসহ বিভিন্ন এলাকায় এরই মধ্যে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনা ঘটে গত বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর, কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার গাইন্যাকাটা এলাকায়। সেখানে বিশাল অংশে পাহাড় ধসে পড়ে রেললাইনের ওপর, যার ফলে দীর্ঘ ৮ ঘণ্টা বন্ধ থাকে ট্রেন চলাচল।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, পুরো ২৭ কিলোমিটারের পাহাড়ি রেললাইনের মধ্যে প্রায় ১০০ মিটার অংশে অতীতে বৃষ্টিতে মাটি পড়ে রেললাইনে উঠেছিল। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মো. সবুক্তগীন জানান, “পাহাড় থেকে যাতে মাটি রেললাইনে না আসে সে জন্য টেকসই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ বছর বর্ষায় আর কোনো সমস্যা হয়নি।”
তবে স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, বর্ষায় চুনতি অভয়ারণ্য ও হাছান কাটা এলাকায় পাহাড় ধসের আশঙ্কা এখনও রয়েছে। কারণ এসব পাহাড় এতটাই খাড়া করে কাটা হয়েছে যে, এখনো সেখানে ঘাস পর্যন্ত জন্মায়নি। বিশেষজ্ঞরাও বলছেন, পাহাড়ে গাছ বা ঘাস না থাকলে মাটি আটকে রাখার প্রাকৃতিক ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, ফলে ধসের ঝুঁকি বাড়ে।
এছাড়াও সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া অংশে রেললাইনের পাশে মাটি কেটে নেওয়া হয়েছে ইটভাটার জন্য। বিশেষ করে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের মৌলভীর দোকান থেকে কেঁওচিয়া ইউনিয়নের আঁধারমানিক দরগাহ লাগোয়া কেরানিহাট লেভেলক্রসিং এলাকা পর্যন্ত, এবং লোহাগাড়ার আমিরাবাদ, আধুনগর ও চুনতি এলাকায়ও রেললাইনের পাশের জমি কাটায় জমিগুলো জলাশয়ে পরিণত হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, এভাবে পাহাড় ও রেললাইনের পাশ থেকে মাটি কাটতে থাকলে শুধু পাহাড় ধস নয়, রেলপথ ধসে পড়ার সম্ভাবনাও তৈরি হবে ভবিষ্যতে।