► গুলিবিদ্ধ রিকশাচালকের মৃত্যু, ► কারফিউ বাড়ানো হলো, থানায় একাধিক মামলা, ► আটক ১৬৪ জন
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি:
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর সমাবেশকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জে সংঘর্ষের পর জেলার সর্বত্র বিরাজ করছে গ্রেপ্তার আতঙ্ক। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টহল ও চেকপোস্টে জনগণ চরম আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।
ঘটনার তৃতীয় দিনেও গোপালগঞ্জে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে সেনাবাহিনী, বিজিবি, কোস্ট গার্ড ও পুলিশের যৌথ টহল জোরদার করা হয়েছে।
গুলিবিদ্ধ রিকশাচালকের মৃত্যু, গোপালগঞ্জ শহরের থানাপাড়া এলাকার গুলিবিদ্ধ রিকশাচালক রমজান মুন্সি (৩৫) মারা গেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন তার ভাই জামাল মুন্সি।
১৬ জুলাই দুপুরে শহরের সিনেমা হলের পেছনের সড়কে তিনি গুলিবিদ্ধ হন। পরে তাকে ঢাকায় চিকিৎসার জন্য পাঠানো হলে বৃহস্পতিবার রাতে তার মৃত্যু হয়।
এই নিয়ে সংঘর্ষে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে পাঁচজন।
নিহতরা হলেন: দীপ্ত সাহা (২৫), গার্মেন্টস ব্যবসায়ী, উদয়ন রোড, রমজান কাজী (২৪), থানাপাড়া, ইমন তালুকদার (১৮), আড়পাড়া, সোহেল রানা মোল্লা (৩৫), টুঙ্গিপাড়া, রমজান মুন্সি (৩৫), রিকশাচালক।
কারফিউ ও মামলার হালচাল, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা পর্যন্ত কারফিউর সময় বাড়ানো হয়। পরে ১১টা থেকে ২টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল করা হয় এবং এরপর আবার অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি করা হয়। জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মুহম্মদ কামরুজ্জামান এক আদেশে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত কারফিউ বাড়িয়েছেন।
থানায় একাধিক মামলা, ঘটনার প্রেক্ষিতে গোপালগঞ্জের বিভিন্ন থানায় বেশ কয়েকটি মামলা দায়ের করা হয়েছে:
কাশিয়ানি থানায়: ৭০ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত ৩০০ জনকে আসামি করে মামলা
কোটালীপাড়া থানায়: এসআই উত্তম কুমার সেন বাদী হয়ে ১৫৫ জন নামীয় ও ১৫০০ অজ্ঞাত আসামি
সদর থানা: পুলিশের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে ৭৫ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ৪৫০ জনকে আসামি করে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দায়ের
গ্রেপ্তার ও অভিযানের বিবরণ, সদর থানার ওসি মীর মো. সাজেদুর রহমান জানান, এখন পর্যন্ত মোট ১৬৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। থানাভিত্তিক গ্রেপ্তার সংখ্যা: সদর থানা: ৪৫ জন, মুকসুদপুর থানা: ৬৬ জন, কাশিয়ানি থানা: ২৪ জন, টুঙ্গিপাড়া থানা: ১৭ জন, কোটালীপাড়া থানা: ১২ জন, গ্রেপ্তারদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
নদীপথে নজরদারি, কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লে. কমান্ডার হারুন-অর-রশীদ জানান, দুষ্কৃতকারীরা নদীপথ ব্যবহার করে পালাতে না পারে, সেজন্য কোস্ট গার্ড ও নৌবাহিনী নদীপথে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করছে। সব সন্দেহভাজন নৌযানে তল্লাশি ও যাত্রীদের পরিচয় যাচাই করা হচ্ছে।
মানুষের আতঙ্ক ও জনজীবন, কারফিউ সত্ত্বেও গতকাল কিছুটা জনচলাচল দেখা গেছে। তবে অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ ছিল। কেবল ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দোকান খোলা ছিল পাড়ামহল্লায়। সদর থানার সামনে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের স্বজনদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। প্রশাসন জানিয়েছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে।
Web: bdkhabor.com. call : +8801823218888. Email: infobdkhabar@gmail.com
www.facebook.com/bdkmultimedia ★ www.facebook.com/bdkhabor24 ★ www.youtube.com/@bdkhabortv