একজন শিক্ষিত ব্যক্তি জ্ঞানের আলো হাতে নিয়ে অজ্ঞতার আমানিশা দূর করার চেষ্টা করেন ।টর্চের আলো শুধুমাত্র সামনের দিক আলোকিত করে একজনকে পথ দেখায়, অন্যদিকে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হচ্ছে জ্ঞানের মশাল , এমনই একটি জ্ঞানের মশাল কুমিল্লার মুরাদনগরের নবিয়াবাদ আলহাজ্ব আব্দুল ওয়াদুদ সরকার ফাযিল মাদ্রাসা ।দাখিল ,আলিম, ফাজিল ,পরীক্ষায় এ মাদ্রাসার ছাত্র ছাত্রীরা অসামান্য অবদান রেখে মাদ্রাসাটিকে কুমিল্লার একটি বিখ্যাত মাদ্রাসায় পরিনত করেছে। তিনটি বোর্ড পরীক্ষায় ফাযিল ক্লাসের পরীক্ষার্থীরা১০০% পাশ করে মাদ্রাসার সুনাম বৃদ্ধি করেছে। মুরাদনগরের অজ পাড়াগাঁয়ের মনোরম পরিবেশে মাদ্রাসা টি অবস্থিত ।কয়েকটি পুকুর সবুজ বৃক্ষরাজি সুশোভিত নৈসর্গিক সৌন্দর্যে ভরপুর মাদ্রাসা টি অত্র এলাকার দ্বীন শিক্ষার প্রাণকেন্দ্র পরিণত হয়েছে। সূত্রে জানা যায়, হাজার ১৯৯৫ সালের ১ জানুয়ারি মাদ্রাসাটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হয়। প্রথম দিকে মাদ্রাসার ছাত্র সংখ্যা কম ছিল ,ৎতারপর ধীরে ধীরে শুধু ছাত্র সংখ্যা বাড়েনি, মাদ্রাসার অবকাঠামোও বেড়েছে ।একাডেমিক ভবনটি বহুতল বিশিষ্ট । এছাড়া এ মাদ্রাসায় রয়েছে শিক্ষকদের মিলনায়তন ,গ্রন্থাগার ,বিজ্ঞান ভবন, উন্নত শ্রেণিকক্ষে। গ্রন্থাগারে 1300 পুস্তক রয়েছে।এ মাদ্রাসা থেকে দাখিল পরীক্ষায়১৯৯৮ সালে ৭৫ পার্সেন্ট ১৯৯৯ সালে ৯৫%,২০০০ সালে ৯৩%ছাত্র-ছাত্রী পাস করেছে ।আলিম পরীক্ষা ৯৭সালে ৭৫% , ৯৯ ও ২০০৫ সালে ৯৫% পরীক্ষাতে পাশ করে মাদ্রাসার সুনাম বৃদ্ধি করেছে। বর্তমানে ভালো পরীক্ষায় ভালো ফলাফল দেখানোর জন্য কিছু কিছু প্রতিষঠান ভালো ছাত্র অর্থের বিনিময় সংগ্রহ করলোও নবিয়াবাদ আলহাজ্ব আব্দুল ওয়াদুদ সরকার ফাজিল মাদ্রাসা ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। এখানে , ৩২ জন শিক্ষক ও কর্মচারী আন্তরিকতার সাথে কাজ করছেন ।প্রিন্সিপাল সাহেবের সু দক্ষ পরিচালনায় এবং অভিজ্ঞ শিক্ষক মন্ডলীর প্রচেষ্টায় কম মেধা সম্পন্ন ছাত্র-ছাত্রীরা এ মাদ্রাসায় ভর্তি হয় ভালোভাবে লেখাপড়া করে আকর্ষণীয় ফলাফল অর্জন করতে সক্ষম। শুধু পাশের ক্ষেত্রে নয় গুণগত মানের ক্ষেত্রেও মাদ্রাসার ছাত্র ছাত্রীরা অভাবনীয় সাফল্য লাভ করেছে। ১৯৯৭ সালে মোঃ আবুল খায়ের মাদ্রাসা বোর্ডের মেধা তালিকায় পঞ্চম ১৯৯৪ সালে ২জন জিপিএ ৫, ২০০৫ সালে ৭জন এ প্লাস পেয়েছে। এছাড়া পঞ্চম শ্রেণীর বৃত্তি পরীক্ষায় ২/৩ জন ছাত্র-ছাত্রী মেধা বৃত্তি লাভ করে। নবিয়াবাদ গ্রামের বিশিষ্ট লোক কৃতি সন্তান মিজানুর রহমান ও হামিদুল হোসেন তাদের পিতা আলহাজ্ব আব্দুল ওয়াদুদ সরকারের নামে মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করেন। ছাত্র-ছাত্রীরা জানান প্রথম শ্রেণী থেকে ফাজিল ক্লাস পর্যন্ত তাদেরকে বেতন দিতে হয় না। গরীব ও মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে বিনামূল্যে কিতাব দেয়া হয়। এছাড়া থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া মুরাদনগর থানার ছাত্রছাত্রীদের লেখাপড়ায় উৎসাহ দেওয়ার জন্য মায়ের নামে জোবেদা খাতুন ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট গঠন করা হয়েছে। ২০০১ সাল থেকে পঞ্চম শ্রেণীর ১০জন এবং অষ্টম শ্রেণীর ৫ জনকে ২০ হাজার টাকা বৃত্তি প্রদান করা হয়। প্রতি বছর মাদ্রাসায় বার্ষিক মাহফিল হয়। মাদ্রাসাটির বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এটি একটি বিজ্ঞান ভিত্তিক মাদ্রাসা। এখানে আলিম ক্লাস পর্যন্ত বিজ্ঞান বিভাগ চালু রয়েছে। ছাত্র-ছাত্রীদের নামাজ পড়ার সুবিধার্থে ১কোটি ২০ লক্ষ টাকা দিয়ে দোতলা মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে।
0 ভিউ
শিক্ষার আধুনিক প্রতিষ্ঠান// মুরাদনগরের নবিয়াবাদ ফাজিল মাদ্রাসা

আপডেটঃ ১১ জুলাই, ২০২১ | ৩:৫৬




আরো খবর


