মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল পৌরসভার পূর্বাশা আবাসিক এলাকাবাসী ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের হাত থেকে রক্ষা পেল। রবিবার ২৩ এপ্রিল/২৩ ইং শ্রীমঙ্গল পৌর শহরের পূর্বাশা আবাসিক এলাকার নির্মল স্টোরের সামনে রাস্তার পাশে গাড়ি পার্কিং করে শশুর বাড়ীতে বেড়াতে যান শ্রীমঙ্গল ক্যাবল সিস্টেমের চেয়ারম্যান মোঃ সিরাজুর রহমান দিপু। হঠাৎ করে বিকেলে গাড়ী পার্কিং অবস্থায় ধোঁয়া বেরুচ্ছে দেখতে পায় নির্মল স্টোরের মালিকের ছেলে। সে দৌড়ে গিয়ে গাড়ীর মালিককে বলে, এর মধ্যেই গাড়িতে আগুন দেখে পথচারীসহ আশেপাশের লোকজন আতঙ্কিত হয়ে যায়। খবর পেয়ে ইতিমধ্যে পুলিশও ঘটনাস্থলে পৌঁছে ফায়ার সার্ভিসের অপেক্ষা করছিলেন। কেউ কেউ মোবাইলে ছবি ও ভিডিও তুলতে ব্যস্ত। এমন সময় খবর পান মরহুম মোঃ আহাদ মিয়ার সুযোগ্য উত্তরসূরী স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর মোঃ জাহাঙ্গীর আলম সোহাগ, তখন তিনি নিজ বাসায় ভাত খাচ্ছিলেন। আগুন লাগার খবর শুনা মাত্রই খাবারের প্লেট রেখে হাত না ধুয়েই বাসায় রাখা আগুন নিভানোর যন্ত্রটি নিয়ে দৌড় দেন। এক দৌড়ে সোজা গাড়ীর কাছে গিয়ে দুর্দান্ত সাহসীকতা ও দক্ষতার সঙ্গে আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ করেন। চার পাশের উৎসুক জনতা অবাক দৃষ্টিতে দেখতে থাকেন। এযেন কোন ছবির শ্যুটিং হচ্ছে। দাঁড়িয়ে থাকা এক বৃদ্ধকে বলতে শুনা যায় “বাঘের ঘরে বাঘই অইসে। এযেন আরেক আহাদ মিয়া”। গাড়ীর মালিক সিরাজুর রহমান দিপু বলেন, আমি রাস্তায় পাশে গাড়ী পার্কিং করে শশুর বাড়ীতে দাওয়াতে ছিলাম, হটাৎ শুনি গাড়ীতে আগুন লেগেছে, হতভম্ব হয়ে যাই। হঠাৎ দেখি সোহাগ চাচা দৌড়ে এসে উনার নিজের আগুন নিভানোর যন্ত্রটি দিয়ে আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ করেন। উনি সম্পর্কে আমার চাচা শ্বশুর হন। গাড়ীটি এলপিজি গ্যাস লোড ছিল। ওয়্যারিং এর ত্রুটির কারণে শর্টসার্কিট থেকে আগুন লেগেছে। যদি সময় মতো সোহাগ চাচা না আসতেন তাহলে ২/৩ মিনিটের মধ্যেই গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়ে বড় ধরনের দূর্ঘটনার ঘটতো। উনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা নেই। যিনি নিজের জীবন বাজি রেখে এলাকাবাসীকে ভয়াবহ দুর্ঘটনার হাত থেকে বাঁচালেন। এর মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখেন কাউন্সিলর নিজেই অত্যন্ত দক্ষতা ও বিচক্ষণতার সঙ্গে আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ করেন। পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস কর্মীসহ উপস্থিত সকলেই উনার এমন মানবিক সহযোগিতায় জীবন বাজি রেখে ঝাপিয়ে পরার ভূয়সী প্রশংসা করেন। এবিষয়ে জাহাঙ্গীর আলম সোহাগ বলেন- মাত্র ১৩৫০ টাকার একটি অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র রক্ষা করতে পারে আপনার লাখ টাকার সম্পত্তি। আমাদের প্রত্যেকের বাসায় একটি করে অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র রাখা জরুরী। সবার কাছে একটাই অনুরোধ করছি “নিরাপদ থাকুন, নিরাপদ রাখুন, আপনার শহর”।