আমরা নিজেদেরকে আশরাফুল মাখলুকাত দাবি করলেও আমাদের মধ্যে ভালো স্বভাবের পাশাপাশি পশুর স্বভাব ও রয়েছে। হিংসা-বিদ্বেষ , ঘৃণা, অন্যায়ভাবে কারো উপর আক্রমন করা, অবৈধ ভাবে সম্পদ দখল করা, যৌতুক নেয়া, কারো অধিকার কেড়ে নেয়া হচ্ছে পশুসুলভ কাজ। আমরা প্রতি বছর পশু কুরবানী করলেও নিজেদের মনের পশুত্বকে বিসর্জন দেই না । তাই তাকওয়া অর্জন করতে পারিনা।
ঈদ-উল-আযহা থেকে আমরা শিক্ষা গ্রহন করি না বলেই আমাদের সমাজের অন্যায় অবিচার ও শেষ হয় না । আমরা আল্লাহকে রাজি-খুশি করার জন্য কুরবানী করব । আল্লাহ পাক পবিত্র কুরআনে বলেন , এগুলোর গোশত ও রক্ত আল্লাহর কাছে পৌঁছে না। কিন্তু পৌঁছে তোমাদের তাকওয়া। ( সূরা হজ্জ আয়াত- ৩৭ )। এ আয়াতের ব্যাখ্যায় মুফাসসিরগণ লিখেছেন- জাহিলিয়াতের যুগে যেমন আরব বাসিরা দেবদেবীর মূর্তির জন্য পশু কুরবানী দিত এবং সেগুলো নিয়ে গিয়ে আবার তাদের বেদীমূলে অর্গ দিত। ঠিক তেমনি আল্লাহর নামে কুরবানী দেয়া জানোয়ারের গোশত তারা কাবা ঘরের সামনে এনে রেখে জমা করত এবং রক্ত তার দেয়ালে লেপে দিত। তাদের মতে এ কুরবানী আল্লাহর সামনে সংশ্লিষ্ট কুরবানীর গোশত পেশ করার মত । এর জন্য বাহ্যিক ইবাদতের চেয়ে অন্তরের তাকওয়া কে ইসলাম বেশি গুরুত্ব দিয়েছে।
কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা’আলা তাঁর সত্তার কিছুটা উন্মোচিত করবেন । তখন ঈমানদার নারী পুরুষ সকলেই তাঁর সম্মুখে সিজদায় অবনত হয়ে যাবে। তাকে সিজদা থেকে বিরত থাকবে কেবল ঐ সমস্ত লোক যারা দুনিয়াতে মানুষকে দেখানোর জন্য, প্রশংসা পাওয়ার জন্য, সিজদা /সালাত আদায় করত । তারা সিজদা করতে চাইবে বটে কিন্তু তাদের পিঠ ও কোমর কাঠের তক্তার মত শক্ত হয়ে যাবে। ( সহিহ বুখারি ৫৩০৮ )।
আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত তিনি বলেন কুরবানীর দিন রক্ত প্রবাহিত করার চেয়ে প্রিয় কোন আমল আল্লাহর কাছে নেই ওই ব্যক্তি কেয়ামতের দিন যবে কৃত পশুর লোম সিংহর ও পশু সমূহ ইত্যাদি নিয়ে আল্লাহর কাছে উপস্থিত হবে কুরবানীর রক্ত জমিনে পৌঁছার পূর্বে তা আল্লাহর নিকট বিশেষ মর্যাদায় পৌঁছে যায় অতএব কোরবানির দ্বারা নিজেদের নফসকে পবিত্রকরণ । ( ইবনে মাজাহ 1045 ) মুসলমানদের সকল ইবাদত উদ্দেশ্য হতে হবে সর্ব শক্তিমান আল্লাহকে খুশি করার জন্য তুমি আমাদের কুরবানী কবুল করো আমিন আমিন আমিন।
0 ভিউ